তারপর… (শুভেন্দু ধাড়া)
তারপর ?
তারপর…
লাল নীল আলোয় কেমন হাসতে হাসতেই
রেণু মিশে গেল অন্য পরাগে ।
আমি আমাকে খুঁজে পেলাম হিরোশিমা’র ধ্বংস স্তূপে ।
এখনও তার আরোপিত প্রভাব
মুছা গেল না !
তারপর ?
তারপর…
লাল নীল আলোয় কেমন হাসতে হাসতেই
রেণু মিশে গেল অন্য পরাগে ।
আমি আমাকে খুঁজে পেলাম হিরোশিমা’র ধ্বংস স্তূপে ।
এখনও তার আরোপিত প্রভাব
মুছা গেল না !
সুখের মতো এক বোধ কাজ করে
তাই ভুলে যাই –
আমি নই আমি নই
আমার আমিত্ব কাজ করে
সুখের মতো এক ঘুম ঘোরে |
এই পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন বটবৃক্ষ –
অজস্র মায়ার মতো – আমিত্ব-হীন |
যদি – ব্রহ্মাণ্ডে কোথাও – কখনো –
এক অভিকর্ষ-হীন –
বলহীন – আকৃতিহীন – আমিত্বহীন
শুধু এক অস্তিত্ব – শুধু শক্তি –
আমি জানি – আমিই সেই ||
তবু সুখের মতো এক আমিত্ব গড়ে তোলে |
আমিই সেই বৃদ্ধ –
জরা -মৃত্যু – ভয় – অতি দীন বিদীর্ণ চিত্ত –
আমিই সেই নারী –
জন্ম – মৃত্যু – সৃষ্টি – ধ্বংস
সেই ঈশ্বরী |
আমিই সেই হ্যামিল্টনের মায়া
আমিই সেই আদুরে সোহাগী হাওয়া |
আমিই সেই ভক্তি –
আমি জানি – আমিই সেই
আমিত্বহীন শক্তি ||
তবু কেন – কেন এক
সুখের মতো বোধ কাজ করে ??
আমাদের চোখ যদি নীবিড় হয়
আমাদের মুখ যদি ঘন হয়
আমাদের ঠোঁট যদি সিক্ত হয় –
অন্য প্রেম যদি গুঁড়ো গুঁড়ো হাওয়ায় ভেসে……
ধুলার মতো অথবা
রেণূর মতো উড়ে যায় –
উড়ে যায় –
আমাকে সিক্ত করে – আমাকে নিষিক্ত করে ॥
আমাদের মন যদি পোয়াতি হয় ॥
সাঁঝ বেলা – ধুপ – প্রদীপ –
ভিড়ে ঠাসা – গাদাগাদি – রক্তাক্ত যৌবন
সূর্যাস্তের মলীন ছোঁয়া
রমণীর খোঁপার মতো
পরিপাটি চাঁদ –
আমাদের দু পা যদি আড়ষ্ট হয় –
আমাদের বার্ধক্য যদি লগ্নভ্রষ্টা হয় –
আমাদের শুষ্ক হৃদয়
অচল মন – আর – নীরেট প্রেম –
বার্ধক্য যদি……………
আমাকে ছড়ায়ে দিও হেমন্তের মতো ॥
এক মুহুর্ত যদি থামো ,বলতাম ভালোবাসো
এক মুহুর্ত যদি দাঁড়াও ,হাত দুটি বাড়িয়ে দিতাম
যে পুড়ছে অবিরত যতুগৃহে,
কাঙ্গাল সে কাঙ্গাল ইন্দ্রধে
“ফুল সে তো গন্ধ ছড়িয়েই খালাস !
পাগল ভ্রমর আজ মাতাল, দেবদাস ।”
মধু আলিঙ্গনে দুই বাহু যদি বন্দি বানাতে চায়
অনন্ত জলরাশি ভাসিয়ে নিয়ে যায় !
পালকের পরশ লাগে, কাশ ফুলে শিহরন । বসন্ত !
তুমি কবে আসবে ? না কি এসেই পড়েছ !
বুছতে পারছিনা, দেখতে পাচ্ছি না ,
চোখ হতে নীল তারা দুটি তুলে নিয়েছো সেই কবেই,
দেবী , যদি একটু দাঁড়াও ,
না হয় পুজার ছলেই কলিজাটুকুও অরপন করি তোমায়,
এক ছটাক মদ নিয়ে
মাতলামির অন্ত নেই আমার…..
ভাবি কয়েক হাজার বছর ধরে
একতাল কাদা, বার্নিশ
হাতে মুখে ঠোঁটে ঘষে
অবশেষে পাথুরে প্রতিমা ,
….. এটাই সত্যি ৷
নায়েগ্রার মুখের মতো ধোঁয়াশা,
হিমালয়ের বুকের মতো – বিচূর্ণ
অথবা ব্যারেনের অগ্নিগর্ভ
হৃদয় থেকে তুলে আনা
একতাল উত্তপ্ত লাভা ৷
আমি নাভিতে যোনিতে চুমু দিয়ে দেখি
রাত শেষ হয়ে গেছে –
ভোরের ঝিমুনিটুকু বাকি ৷
সকালে চোখ ঘষে বুঝি
নিজের সত্তা নিয়েই
ধৃষ্টতার অন্ত নেই আমার ৷
Or
Recent Comments