Tag: Abritti

রোহিঙ্গা

হায় রে শিশু – হায় রে কিশোর
কোথায় জ্বলে – তোর ঘরদোর ।
কোথায় পড়ে আম্মি তোদের
কোন নদীতে হয় গো কবর
কোন বেয়নেট – ছিন্ন করি
আব্বু তোদের – বেহেস্ত পাড়ি ।
কণ্ঠ তোদের – রুদ্ধ করি
পালিয়ে যা তুই সে দেশ ছাড়ি।
তবুও যদি তর্ক করিস
আগুন তবে – পুড়িয়ে মারিস –
যুগ যুগান্তে – একটাই দল
যেভাবেই হোক – ক্ষমতা দখল –
এই ধর্ম – এ দেশ আমার
এই পৃথিবী আবার আমার -।

এই ধর্ম – এ দেশ আমার
এই পৃথিবী আবার আমার –
এতটা আকাশ – এতটা বাতাস –
এই জমিটা – ঐটুকু শ্বাস –
সব টুকু চাই – সব টুকু চাই –
নইলে এবার – শব টুকু চাই –
আমার কালি – নিয়ম আমার
আমার চাবুক – বলবে এবার –
তোর দুনিয়া? – ছিলই কবে !
টুকরো রুটি – এতেই হবে –
(তোদের) অতীত যতই – হোক পুরানো
নয় আমাদের – নয় ওদেরও –
গুনতিতে যে – অনেক বড় –
এই নিয়মেই – আমরা দড় – ।
এই নিয়মেই – চলতে হবে
এই নিয়মেই – মরতে হবে।
(এই) নিয়ম মেনেই – মৃত্যু মিছিল
যুগ যুগান্তে – হয় না শিথিল -।

(Please Note: We are not intended to heart any religious or any community. They might come significantly into purview. If so, we are extremely sorry for that.)

কেন প্লাবন আসে

আমিও তবে ক্লান্ত বুড়িটির মতো
দেহভারে ন্যুব্জ – বৃদ্ধা – অবসন্ন -।
ব্যাপ্তি আমার ধূসর পান্ডূর –
পথভারে রক্তিম -।
বাঁধটুকুর চিহ্নমাত্র নেই কোথাও।

শ্রাবনে বুকে আমার
শৈশব, কৈশোর – খেলা করে – ছবির মতন।
গ্রীষ্মে উত্তপ্ত নিঃশ্বাস – হাহাকার – বুক জুড়ে –
দেহাতি মিঠে রোদে মনে পড়ে – শীত এসে গেছে।
পরিচিত পরিযায়ী পাখিদের একটানা স্তব –
শীর্ণ শরীরে আমার –
অবিরাম অবিশ্রান্ত – ক্লান্তিহীন – সময়।

একদিন আমাকেও চলে যেতে হবে –
ইতিহাস মেনে নেবে সব –
আরো কত পথ – কত সময় -।

তবু বুকে যদি হঠাৎ কোনো প্লাবন আসে –
তিস্তা – তোর্সা – অথবা জলঢাকা নদীটির থেকে –
ফিরে আসা – হঠাৎ কোনো প্লাবন বলে –
চলো চলে যাই – আবার দুহাতে দুহাত ধরে –
দেশ – গ্রাম – জনপদ ছেড়ে – অমৃতের সন্ধানে -।।

মেয়েটা ফিরে আসেনি (বিনয় চন্দ্র দাস)

মেয়েটা যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিল-
বাবার দিকে একটু লক্ষ্য রেখো মা
ভাই যেন ঠিকঠাক পড়াশুনা করে;
আরও বলেছিল- তোমাদের ছাড়া থাকতে পারবো না আমি…
ওর বিদায় লগ্নে –
শঙ্খ আর উলুধ্বনির তরঙ্গের সাথে
ভেসে গিয়েছিল আমাদের অব্যক্ত ব্যাথা দুর-দুরান্তে!
ভাবতে অবাক লাগে-
একটা মেয়ে রাতারাতি কেমন করে
এক নারীতে পরিনত হয়।

মেয়েটার কথামত লক্ষ্য করতে গিয়ে দেখেছি
লোকটা ক্রমশ পাথরের মতো নির্বাক – নিরুৎসাহ,
জীবনের সব সুখ আনন্দ …
গ্রীষ্মের ডোবা পুকুরের জলের মতো
হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।
ছেলেটা – ছেলেটা দিদির সংসারে সুখের জন্য
পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে
একটা মুদীর দোকানে কাজ করে।

মনে পড়ে-
ওরা যখন অষ্টমঙ্গলায় এসেছিল-
দারুন উৎফুল্ল ছিল মেয়েটা,
খুশীতে মুখখানি যেন পুর্নিমা চাঁদের মতো উজ্জ্বল
পাহাড়ী ঝর্নার মতো কল্লোলিনী সে।
যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিল-
আমি খুব ভাল আছি মা।

তারপর ছ’মাসের মাথায় যখন এলো-
যেন চাঁদের গায়ে ছাপ ছাপ অন্ধকার
অনেকটা মলিন – ম্রিয়মান সে।
আমার কানপাশা জোড়া দেখতে না পেয়ে বলেছিল-
ওদের জন্য আর কত করবে মা?
যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিল-
ওখানে আর ভাল লাগে না…

এক বছরের মাথায় মেয়েটা একাই এসেছিল;
তখন একেবারে বিধ্বস্ত-হতাশ,
লাল নীল হলুদ পছন্দের কয়েকটা শাড়ী
কিছু গয়না রেখে দিয়ে বলেছিল-
ও গুলো আর ভাল লাগে না মা ।
যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিল-
আর কবে আসবো জানি না…

মেয়েটা আর কোনদিন ফিরে আসেনি-
শুধু একটা ফোন এসেছিল…
মাঝরাতে কিংবা ভোরের আগে।
সেদিন হয়তো আর ভোর হয়নি-
ভোরের পাখীগুলি আর কলোরব করেনি।
শুধু একটা কাক ডাকছিল ছাদের কার্নিশে
বুকটা আমার ব্যাথায় ভেঙে যাচ্ছিল!

মেয়েটার জীবনে আর কোনদিন ভোর আসেনি-
ভোরের আলো ফোটেনি।
মেয়েটা কোনদিন আর ফিরে আসেনি-
কোনদিন আর কিছু বলেনি…

নক্ষত্রের আপন আলো (বিনয় চন্দ্র দাস)

ধূসর পৃথিবীর এক প্রান্তে বসে আছি একাকী
কতজন যায় আসে আশা নিরাশায়
উদাস বিকালের হওয়ায় ।
আমার গন্তব্যের গাড়ি অতি বিলম্ব
আমার জন্মলগ্নের মতো।

চাঁদের পুর্ণ অবয়বে জাতকের জন্ম শুভ
যশ খ্যাতি দুয়ারের চৌকাঠে,
নক্ষত্রের আপন আলোয় দীর্ঘপথ চলা-
তাই অতিরিক্ত কিছুকাল অপেক্ষা মাতৃগর্ভে
বিড়ম্বনায়।
ভূমিষ্ঠকালে কান্নাটা জমা ছিল বিধাতার কাছে –
হয়তো ভবিষ্যতের জন্য।

বিলম্বিত গাড়িটা অহর্নিশ চলতে থাকে
ব্যাথা বেদনা কিংবা হতাশার স্টেশনগুলি ছুঁয়ে ছুঁয়ে!
আমার স্বপ্ন-আশা হারিয়ে যায় চিলের ডানায়
এক প্রগাড় অন্ধকারে।
আমার বালখিল্য ইচ্ছাগুলো
মিহি সুতোর কার্পেটে হামাগুড়ি দেয়।

একদিন এক ঊর্বশী ভালবাসর বন্ধ্যা জমিতে
প্রেমের বীজ লাগিয়ে –
এক আলোকবর্ষ দুরে ।
বিফল পরাগরেণুগুলো বাতাসে মেশে অকারন-
অবশেষে নিঃসঙ্গ রাত্রিযাপন।

ব্যর্থ নক্ষত্রের আপন আলো নিঃশেষিত
অন্ধকারের আলোর গভীরে-
তারপর সেই ভুমিষ্ঠকালের গচ্ছিত নিঃশব্দ কান্নাটা
ভাসিয়ে নিয়ে যায়
প্রবাহহীন হৃদয়কে গভীর সমুদ্রের দিকে;
যেখানে অসীম আকাশকে
বড় আপন বলে মনে হয়।

দরজা খোলা (বিনয় চন্দ্র দাস)

দরজা খোলা, তুমি আসতে পারো-
তুমি আসতে পারো উজানে
তোমার স্যাঁতস্যাঁতে অনুভুতিকে
অভিমানের কাছে বন্ধক রেখে।
তুমি আসতে পারো-
তোমার সমস্ত দ্বিধা সংকোচকে
নীল দিঘীর জলে ভাসিয়ে-
ভারহীন পদক্ষেপে।

তোমার নীরব শীতলতায়
এখনও আমার ইচ্ছাগুলো জমে বরফ হয়নি…
এখনও আমার অগোছালো স্বপ্নগুলো
অনিদ্রা চোখের তারায়-
তোমার অপেক্ষায়।

তুমি আসো নি বলে
ভরা বসন্তের পলাশ গুলি ঝড়ে যেতে চায়;
ক্যানভাসের অর্ধেকটা –
এখনও ফাঁকা পড়ে আছে।

দরজা খোলা, তুমি আসতে পারো-
যদি তুমি আসো কোন এক জ্যোৎস্নারাতে,
কথা দিতে পারি…
তোমার মনের বাগীচায়-
একটা গোলাপ চারা লাগাবো;
যদি একটাও গোলাপ ফোটে-
তার অধিকার শুধু তোমার আর আমার ।

 


 

Announcements

  • আপনাদের আশীর্বাদে আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ অষ্টম বর্ষ অতিক্রম করলো। আমরা আমাদের এই site টি নতুন ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম। আপনাদের মতামত জানান আমাদের email এ (info@amarbanglakobita.com)। বিশদ জানতে contact us menu দেখুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
  • আনন্দ সংবাদ! আমাদের এই site এ এবার থেকে গল্প, অনু গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস প্রকাশিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

Recent Comments

Editorial Choice