Category: Others

অলীক সুখ (হাসান ইমতি)

আতস কাচের চোখ থেকে আকাশের নীল
ঢেকে দেওয়া বৃষ্টির ঝুম পর্দা সরিয়ে যখন
তুমি নারীসুলভ পেলব ছলনা মেখে পুরনো
অতীতকে ফিরে পাবার অনাবৃত বাসনায়
বহুদিন পর আবার তাকালে আমার পরিত্যক্ত
পৃথিবীর মত বদলে যাওয়া পুরুষ চোখে তখন
আর আগের মত দক্ষিণ মেরুর সব সাদা বরফ
গলে মহাপ্লাবন এলো না নুহের পৃথিবীতে ।

কেবল একাকী রাত কান্নার মত হেসে লুটিয়ে
পড়ল শরীরসর্বস্ব নারীর ক্লান্তিকর অস্তিত্বে উষ্ণতা
খোঁজা বোকা মানুষটির সুখ ভাবনার উদারতায়,
তবু তুমি স্বার্থের হিসেবী শকুন চোখের মোহ হটালে
না আমার তোমার জন্য মৃত পাথর চোখ থেকে,
সব ভুলিয়ে দেয়া মায়াবী কন্ঠে পুরনো সেই মধু
ঢেলে আগের মত জানতে চাইলে “কেমন আছো ?”

তখন ভালো থাকা না থাকার মাঝের কুমারী
পর্দাটা ছিনাল নারীর মত বেফাঁস দুলে উঠে
বলল, প্রিয়তম, আবার দেখা হবে সহরমনে,
ডানা ঝাপটানো মৃত্যুর মত বেশরম কষ্টগুলোকে
ডালপালা সহ ভেসে যাওয়া শারীরিক রাতের
নিজস্ব গল্প শোনাতে শোনাতে ফিরে পাওয়া
গাঙ হরিণের ক্ষুধিত জীবন থেকে আমি ফিরিয়ে
দিলাম স্মৃতির দংশন জর্জরিত কিছু অলীক সুখ ।


 

অনুভুতি (ইসহাক জাভেদ)

বুক থেকে ঝরে পড়া কবিতার মাঝে ,
তোমায় দেখেছি আমি শাওন রাতে।
কবি বলে কবিতা সেতো তুমি নও;
আমি বলি সুন্দর অতি সন্দর তুমি হও।

হিয়ার মাঝেতে মোর কত, কত ফুল ফোটে;
তার মাঝে মন মর শুধু তোমায়, তোমাকেই যাচে।
জানিনা কেন তা জানি না,
আমি, তোমার কাছেতে যেতে পারি না।
দূর থেকে দেখি আমি যাতে টুটে পড়ে।

কবি বলে ভিতু তুই, কাছে যেতে পাস ভয়;
আমি বলি ভিতু নই, এযে ভালোবাসা,ভালোবাসা একেই কয়।


 

অফুরান (শুভেন্দু ধাড়া)

এইভাবে না দেখা বিপথের কোলাকুলিতে
আলোকবর্ষ দিয়েছে পথ
ওপাড়ের ভিনদেশীয়
স্তব্ধতার পাণ্ডিত্যে – আমার এপাড় ভেসে যায় ।

হলকা হাওয়ার আঁচড় পরম্পরায় বিঁধে পাদদেশ
লিকলিকে খনিজ উপাদানে বর্শার চোখ নিবদ্ধ হলে
শিউলির সোহাগ ভুলে পর্যাপ্ত প্রহর
গুনেছি অভিশাপ ।

তবুও এইসব অফুরান নিয়ে নিয়ত শুভেচ্ছায়
বসন্ত উসকেছি মধ্য শিখার নিশীথে
সেই যেথা কোনও এক প্রশস্তকাল
আমিই মুষল হতাম সমগ্র জ্যামিতিময় ।

আসলে আমারও ঘোড়া হওয়ার সাধ ছিল রেসের ময়দানে
ছিলনা শুধু জুয়া খেলার কঠোর অভিসন্ধি ।

 


 

 

চাতক (শুভেন্দু ধাড়া)

অবশেষে আহ্লাদী পাতা সবটুকু বিবর্ণ নিয়ে উপমা হীন ,তরল রেটিনার
গর্ভস্থ গ্লেসিয়ার যদি আবেগী হত, কিছু ঘনত্ব হারাত নির্মম ।

‘পাথর তুমি আতর দিলে না, সে এতই অযথার্থ! তার
নাভিমূল ছিঁড়ে নির্ভুল শিহরন, নৈশব্দ দিলদার ’।

অক্ষাংশ বেয়ে এক মুখশ্রীর আবর্তন নিমগ্ন হলে জলজ নোটবুকে
বিজয়িনীর চন্দন সুবাস পৃষ্ঠা-পার, মূর্ছনা ভেঙ্গে ভেঙ্গে প্রেম প্রতীকী ময় ।

‘কম্পিত ধমনি আরও বেশি দাহ্য হিমে, অতল
এমনি উন্মাদনায় হাজার বছর টলমল’ ।

ঠিক গ্রীষ্মের চাতকের মত, মেঘের মন না বুঝেই অঙ্কুরিত স্বপ্ন এ-ডাল ও-ডাল শেষে
পুনশ্চ: আগামী এঁকেছে নকল নকসা ,অন্ধত্বের ভয়ানক প্রাজ্ঞতায় ।

 


 

ক্যানভাস (শুভেন্দু ধাড়া)

শোনো, সেই হাতটার
গল্পটা আজও বলা হয়নি ।

হ্যাঁ, সেই হাত, যার পেশিতে
আনকোরা শিল্পী রচেছে কেবল শিকড়,পাঁচ আঙ্গুলে
বিদ্রোহী বিক্ষুব্ধ আবেগ । আগ্রাসী লতা গুল্ফ
নির্ভুল লক্ষ্যে জড়িয়ে ধরেছে তার চৌহদ্দি ।

আমি যে তোমায় প্রতিবেশী মনে করি
আমি কি তোমায় বাড়তে দিতে পারি?
বল’ তুমি-ই বল’ ।

জানি আমি জানি,
এভাবেই  কেটে গেল কত সূর্য কত বৈশাখ
বিশ থেকে চব্বিশ, চব্বিশ ফেলে আটাশ ।

তবুও নাছোড়বান্দা সে হাত
আলোছায়ার ক্যানভাসে টিক টিক শব্দের ভরসায়
আবার মুষ্টিবদ্ধ হচ্ছে তার নীলাভ উড়ানে।

 

 

Discussion open [See More]


 

Announcements

  • আপনাদের আশীর্বাদে আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ অষ্টম বর্ষ অতিক্রম করলো। আমরা আমাদের এই site টি নতুন ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম। আপনাদের মতামত জানান আমাদের email এ (info@amarbanglakobita.com)। বিশদ জানতে contact us menu দেখুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
  • আনন্দ সংবাদ! আমাদের এই site এ এবার থেকে গল্প, অনু গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস প্রকাশিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

Recent Comments

Editorial Choice