Tag: river

আবারও আসিও ফিরে

আবারও আসিও ফিরে –
এই – ভোর কুয়াশার তীরে –
নরমে লাজুকে – শিশিরে নিশীথে –
কাটে নাকো নিশি – একলা ফিরিতে।
স্নিগ্ধ সবুজে, নুপুর’ পরশে
যুথিকা ডালিতে হিমেল দিবসে।

একা যেন ধাই – তোমা প্রাণে নাই –
আমাতে তোমাতে দোহারে মিলিতে
তপোবন’ মাঝে দেউড়ি খুলিতে –
শেষ বার যেন – মরমে পরশে –
শীতল উষ্ণতা তব – পুলকে হরষে।
অমা নিশি শেষে – সেই যেন পাই-
আর কিছু নাই – আর কেহ নাই –
বিদায় দেহ – এইবেলা যাই।

(ধন্যবাদান্তে – শ্রীযুক্ত সুদীপ্ত মাইতি )

                  (অমিতাভ)

কাল দেখো তবে

“থেকে যেতে পারতে! আরও একটা মাস – আরও একটা বছর –
যেমন ভাবে – পাখিদের গান শুনে শুনে – তিস্তার কোলে মাথা রেখে-
এই পাথরের স্তূপ গুলো রয়ে গেছে – কতকাল।
সবুজের ডানা মেলে – সন্ধ্যা নামার আগেই না হয় –
আমাদের – হয়ে যেতে। ”

“তোমাদের হতে গেলে – বুকে লাগে দম –
প্রাণে চাই স্ফূর্তি – রক্ত আরো লাল হওয়া চাই। ”

“বেশ – তবে তোমায় আরও রাঙিয়ে দেব –
কাল ঠিক সূর্য ওঠার আগে;
স্বপ্নের কড়িকাঠ গুলো পেরিয়ে –
ঘুম ভেঙে – এসে দাড়িও – এইখানে – এইভাবে। ”

“জানি না – সেই অন্ধকার ঠেলে আসা হবে কিনা।
ঘুম ভাঙার ঠিক আগে – যখন যন্ত্রনা গুলো খুব জাগ্রত হয়ে ওঠে –
মনে হয় মুহূর্তে মুহূর্তে স্খলন – আর কদাকার তছরুপ,
সর্পিল আগ্রাসন – আমাকে গ্রাস করে।
আমি তখনি ঠিক – আবার ঘুমিয়ে পড়ি।
মনে হয় এই প্রভাত – এই সূর্য – এই আলো – কিছুই চাই না –
অন্ধকার ঢের ভালো। আমি ঘুমিয়ে পড়ি। ”

“বেশ – তবে তোমার সেই যন্ত্রণার ঠিক আগে –
তুমি দেখো – আমি এসে যাবো।
তোমার বাড়ীর উঠানে – যেখানে একরাশ শিশির এসে –
বরফ হয়ে গেছে –
আমি ঠিক এসে যাব।
কাল দেখো – তোমার ভোর গুলো সব তারা হয়ে যাবে –
পাহাড়ের গায়ে গায়ে; আর কান্না গুলো বরফ।
হেমন্তের মিষ্টি গন্ধ গুলো সাজিয়ে দেব তোমার বাগানে –
তোমাকে রাঙিয়ে দেব – অনেক – আমার নরম ভোরে। ”

থাক! এখন ওসব কথা থাক।
স্বপ্ন দেখতে বড় ভয় হয় – তাই কত দিন আমি স্বপ্ন দেখি না।
আচ্ছা বলতো – এখনো কি শিশিরের দানা খুঁটে খুঁটে সেই ভাবে ভোর নামে –
আর সেই স্তর স্তর জমে থাকা অভিমান গুলো –
এখনো কি লজ্জায় লাল হয়ে যায় ?
ভোর দেখতে বড়ো ভয় হয় – কতদিন আমি ভোর দেখি না।

ভোর!
আরও সুন্দর হয়েছে সে।
কাল দেখো তবে – রঙ্গীতের তীর ধরে –
আলতা ভেজা পায়ে দুরন্ত কিশোরীর মতো।
কাল দেখো তাকে।
আমি বলে দেব – মাথায় হলুদ রডোডেনড্রন –
আর – হাতে যেন থাকে মোহন বাঁশি।
তোমার স্তব্ধ চোখ দুটি – নীল – আরও গভীর নীল – ঘন করে –
রক্তিম আবদারে –
একসাথে যেন কবিতারা ঘর করে। আমি বলে দেব।
কাল দেখো তবে।

                  (অমিতাভ)

চল ভেসে যাই

দিল দরিয়ার মাঝখানে ভাই
ফিরব যে আর সে পথ নাই
দুপাশে যে তুষার চড়াই
চল ভেসে যাই, চল ভেসে যাই।

সমুখ পানে কি আছে তাই
নাই জানা নাই, নাই জানা নাই
হারিয়ে যেতে তাই বাধা নাই
চল ভেসে যাই, চল ভেসে যাই।

আঁচল ভরা সুখের নেশায়
এই ভরা গাঙ মাতল আশায়
চাঁদের ভেলায় ভাসলো হেথায়
যায় ভেসে যায়, যায় ভেসে যায়।

দূর সুদূরের কোথায় আঁকা
মিঠেল ভোরের স্বপন ডাকা
আছে কিনা তাও জানা নাই
হওয়ার তালে ভেসে থাকাই
এখন উপায় আর কিছু নাই –
ভয় কে তাই মিছেই ডরাই –
উপায় যে নাই –
চল ভেসে যাই – চল ভেসে যাই।

 

 

 

For subscribe


 

নদী (শুভেন্দু ধাড়া)

নদীর সাথে আমার অনেক দিনের ভাব ছিল,
সে খুব কবিতা ভালবাসত ।
আমি তার মন রাখতে চরে বসে বসে এক এক পাতা
লিখতাম আর ভাসিয়ে দিতাম তার বুকে ।

কবিতারা ভেসে যেত
সারি সারি নৌকা দুলতে দুলতে  মিশে যেত তার অন্তরে ।

বেশ চলছিল, এভাবেই ।
কিন্তু এক্দিন রাতে কিছুতেই ঘুম আসছিল না চোখে
কেবলই মনে হচ্ছিল কে যেন আমায় ডাকছে
নিশির ডাক, পারলাম না এড়াতে,
মহাশ্মসানের অন্ধকার প্লাবিত পথে পা রাখলাম

পায়ে পায়ে অবশেষে পৌছে গেলাম সেই চরে,
            নদীর পাড়ে ।

নদী সেই রাতে ঝরনার সুরে বেজেছিল অচিন ছন্দে ।
            জোনাকির আলোকমালায়
আমি পৌছতেই সে অপেক্ষার অস্থিরতায় আছড়ে পড়ল বুকে ।
ভাসিয়ে নিয়ে গেল মাঝদরিয়ায়, সাঁতার জানতাম না,
আমি ডুবে গেলাম, আবার ভেসে উঠলাম, এইভাবেই
হাবুডুবু খাছ্ছি আর কানে কানে শুনছি, “আজ থেকে
তুমি শুধু কবি রইলে না আর,
আজ থেকে তুমি সাগর, সাগর আমার “।

সেই রাতের পর ছয় ছটা দিন
কেটেছে নিদ্রাহীন,
বেসামাল আমার খাতার পাতা , শব্দরা ভবঘুরে দিশাহারা
কিছু হাতে আসে  কিছু অধরা
তবুও নদীর জন্য অনেক কাটাকুটি শেষে
একটি মাত্র পাতা সেজেছিল কবিতার বেশে ।

কিন্তু একি !
সাত দিনের বেলায় গিয়ে দেখি

কোথায় নদী ! কোথায় ঢেঊ !কিছুই যে নেই আর
জল স্থির সবুজ, যেন সে নদী নয়, সে নিয়েছে দিঘীর আকার
আমি চিৎকার করলাম ‘ ও নদী , তুমি কোথায় গেলে ? আমি যে কবিতা ভাসাতে এলাম ! তুমি কি নেবে না?
কোনো সাড়া পেলাম না, ” নদী , আমি সাগর বলছি তোমার সাগর, তুমি কি শুনতে পাচ্ছো না ?

এবারও কোনও উত্তর আসে না, নদীর মুখে কুলুপ
আমি দাড়িয়ে চরে, পায়ের নিচের মাটি খসে পড়ে জলে ঝুপ ঝুপ ।
জল স্থির, আমি সামনে তাকাই, সামনের ঔ বাঁকে
বাঁধ পড়েছে মস্ত এই চঞ্চলা নদীর বুকে
চোখ জল এলো আমার , ” বাঁধনেই শেষে ধরা দেবে যদি
মিছেই আমি সাগর হলাম, মিছেই ভালোবাসলাম নদী ” !

হঠাৎ আমার ইচ্ছে হল সামলের ওই বাঁধটাকে
কেটেই দিই, ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে নিঃশ্চিহ্ন করি চিহ্নকে
কিন্তু পারি না, ফিরতে থাকি আপনায়, মন নদীতে ছুটে যায়
নদী বন্দী, প্রান হারা, নদী অসহায়
নদীর বুকে অসংখ্য কবিতা, প্রেম, বিপুল শক্তি ধরে,
এতগুলো সৃষ্টিরা যা পারলো না আমি নগন্য স্রষ্টা তা পারব কি করে !

Announcements

  • আপনাদের আশীর্বাদে আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ অষ্টম বর্ষ অতিক্রম করলো। আমরা আমাদের এই site টি নতুন ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম। আপনাদের মতামত জানান আমাদের email এ (info@amarbanglakobita.com)। বিশদ জানতে contact us menu দেখুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
  • আনন্দ সংবাদ! আমাদের এই site এ এবার থেকে গল্প, অনু গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস প্রকাশিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

Recent Comments

Editorial Choice