Tag: Latest Bengali Poetry

লড়াইটা

লড়াইটা শুধু একার ছিল না।

 

লড়াইটা শুধু পেটের ছিল না –
(ছিল মাথারও,)
লড়াইটা শুধু রক্তের ছিল না –
(ছিল ঘামেরও। )
লড়াইটা শুধু – একটা ছিল না!
(ছিল অনেক। )
লড়াই টা শুধু যুক্তির ছিল না।
(ছিল আবেগ। )

 

লড়াইটা ছাড়া – আর কোনো পথ ছিল না,
(ছিল মৃত্যু।)
লড়াইটা ছাড়া -যার শেষ ছিল না।
(অবশ্য কৃত্য।)

 

লড়াই টা কখনো অস্ত্র নিয়ে নয় –
তবু – লড়াইটা বিনা রক্তেও নয়।

 

লড়াইটা মোটেই সমানে, – সমানে নয়;
লড়াইটা মোটেই শুধু, ‘একার’ – ‘আমার’ নয়।

উত্তর কথা (সুদীপ্ত মাইতি)

মাঝে মাঝে এমন হয়,
      সময় গড়িয়ে যায় –
      উত্তর দেবার।
মনের ভেতর গুনগুনিয়ে ওঠা
     সুর গুলো খুঁজতে থাকে
কথার দেশের ঠিকানা।
মেঘেরা ভাসতে ভাসতে একদিন
     ফুরায় অশ্রুকণায়।
  গোধূলির লাজুক রঙ লাগে
অভিমানী তারাদের চোখে।
রাত পাখিদের ডানায়
      ছড়িয়ে পড়ে –
গভীর রাতের নিয়ন আলো।

তখনও জেগে থাকে একটি হৃদয়
শিশির ঝরার প্রহর গুনে,
কখন লিখবে তার কবি –
       নিভৃত মনের শব্দ দুটি
       চাঁদের গায়ে গায়ে।

বৃষ্টির গান (সুদীপ্ত মাইতি)

ভবঘুরে মনকেমনের মেঘগুলো, 
   আজ বিকেলে কখন যেন 
বহুদূর অতীতে ফেলে আসা 
   খোয়াব গাঁ- এ-র আকাশ ছুঁয়ে, 
    অন্তহীন ঝরে পড়ল – 
স্মৃতির পাহাড় জুড়ে। 
    বারিধারাপাতে আবছা হয়ে এল 
উদাসী মাঠের বিধূর দিগঞ্চল। 
     তার মানসপটে ফুটে উঠল 
এক ঊজ্জ্বল সাদা – কালো ছবি। 

সেদিনও এমনই বর্ষাঘন বিকেল, 
    মনের খেয়ালে পথ হারিয়ে 
     মেঘের হাত ধরা। 
পাখিরা কবেই ফিরেছে কুলায় 
    বাতাসের পথ চিনে চিনে। 
মুখর বর্ষন মাঝে গাছের দল 
     মৌনী – শান্ত,   সুনিবিড়। 
মেদুর বনপথে বৃষ্টি পায়ে পায়ে 
     হেঁটেছিলাম – তোর পাশে পাশে। 
মেঘ ভেজা মালহারে 
           বিভোর হয়েছিল 
আমার একুশ বছরের আকাশ। 

তারপর… 
কত শ্রাবণ কেঁদে ফিরেছে 
     রিক্তদিনের প্রান্তে। 
আকুল ঝরনার ডাক   
  শূন্য হয়েছে নির্জন বালুপথে। 
তবুও আসেনি বুঝি — উত্তর মেঘ। 

বহু বৃষ্টি হীন শুষ্ক দিনের 
       পথ পার হয়ে, 
আজ সহসা বিদায় বেলায় শুনি – 
    ফিরে এসেছে বুঝি, 
আমার সাধের মেঘমালা। 

           টুপ্   টুপ্   টুপ্  
       ডানা হতে তার ঝরে,  

        মা মা পা  ধা নি, ধা নি… 

ভিজে ওঠে সেদিনের গানখানি।

সম্পর্ক (সুদীপ্ত মাইতি)

বেলা-অবেলার কিছু পরিচয় –
আজও ক্ষনিকের সরণি ছাড়িয়ে,
মেদুর পাকদণ্ডী পথ বেয়ে
ছুঁয়ে ফেলে নিবিড় শিখরদেশ।
গল্পবলা এক বিকেলের হাত ধরে –
মাখে অস্তরাগের আলো,
মূলতানী রঙ নিয়ে খেলা করে
অনন্ত ইছামতীর জল।
একলা মানুষের আকাশে সেদিন –
নামে জ্যোৎস্না রাতের বাদল,
শত ঝিল্লি মুখরিত প্রান্তর
উদার হাত বাড়িয়ে, বলে –

“একা নও বন্ধু, তুমি স্বজন,
পথের পরিচয়ে আমার প্রাণের আপন।”

স্তিমিত শিখার কণ্ঠ (সুদীপ্ত মাইতি)

হঠাৎ ধেয়ে আসা উচকিত স্বরে
                এখন আর চমকে উঠি না,
পরিবর্তে একটা স্বস্তি বোধ হয়, –
                গলা তুলে অস্বস্তি জানান দেবার
শক্তি, তবে এখনো আছে !
                নিঝুম বনানীর গভীর প্রদেশ
সজীব রয়েছে, বোঝার জন্য –
              স্তব্ধতাভেদী এমন গর্জন
মাঝে মাঝে শোনা জরুরি।
              নিস্তরঙ্গ প্রবাহ সচকিত করে
শুশুকের দল মাথা না তুললে,
              জীবন নদীর গতি ধারায় –
প্রাণ খুঁজে পাওয়া ভার।
              বহুপূর্বে, এমন অতর্কিত শব্দ –
আকাশ – মাটি – জল চমকে
            স্ফুলিঙ্গ হয়ে ছড়িয়ে পড়ত,
অরণ্যে অরণ্যে দাবানল ঘটাতো।
              আজ বয়সের ছাইয়ে ঢেকেছে
অতীত তেজের সব শিখা।
            তবুও, অঙ্গারের লাল আভায়
বুঝি, আগুনটা এখনো আছে।

Announcements

  • আপনাদের আশীর্বাদে আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ অষ্টম বর্ষ অতিক্রম করলো। আমরা আমাদের এই site টি নতুন ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম। আপনাদের মতামত জানান আমাদের email এ (info@amarbanglakobita.com)। বিশদ জানতে contact us menu দেখুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
  • আনন্দ সংবাদ! আমাদের এই site এ এবার থেকে গল্প, অনু গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস প্রকাশিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

Recent Comments

Editorial Choice