Tag: Kolkata

একলা হাঁটা

এখন অনেক একলা হাঁটা – 
                   ইচ্ছে করে
রোদ বৃষ্টির হাত ধরে –
মেঘ যখন বৃষ্টি অনেক –
টাপুর টুপুর – একলা মনে 
হাত ধরে তার – যাই হেঁটে যাই 
মেঘের 'পরে দিনে দিনে। 
এখন অনেক – একলা হাঁটা 
               ক্ষণে ক্ষণে –
               আপন মনে।

বিকেল তখন – আকাশ জুড়ে –
একলা তারা অনেক দুরে –
আপন মনে – একতারা তার 
মনখারাপি বাউল সুরে 
তুলোর মত – পেঁজা পেঁজা –
পেলব ঘাসে হিমেল পায়ে –
দূর পেরিয়ে – অনেক দুরে –
একলা হাঁটা – একলা হাঁটা –
             আকাশ জুড়ে –

এখন অনেক – একলা হাঁটা – ইচ্ছে করে।

মমিহৃদপিন্ডের ক্লান্তিকর চুমুক (মৌসুমী রায় ঘোষ)

নীলতিমি চোখ মেলে ।
সিন্দবাদের জাহাজ ।
জলফোয়ারা এঁকে দেয় স্বপ্নপাল ।
গভীর রক্তপাত বুকফাটা আকাশ ।
শিরায়-শিরায় জটপাকায় পাকদণ্ডী ।
কথার মাঝে হারিয়ে যায় কথারা ।
মনবাক ছুঁতে পারেনা কাঠিন্য ।
বরফের মাঝে মমিহৃদপিন্ড ।
ছন্দ ধুকধুকিহিম ।
গ্লাস গ্লাস চুমুক ক্লান্তিভার ।
ঈথারব্যাকুলতার পাতায় পাতায়
দুঃস্বপ্নের নাচানাচি ।

 


 

বলিরেখা (মৌসুমী রায় ঘোষ)

আদিম গুহার অন্ধকার দেওয়ালে
পৃথিবীর প্রথম শিল্পীর আঁচড়ে মিশে আছে বলিরেখা ।
অন্দিতে সন্ধিতে গাঁথা অভিঞ্জতা নদী
অসম্ভবের কাহীনি গর্ভে নিয়ে
বয়ে যায় অজানা গন্তব্যে ।
নদী মেশে নদীতে| শেষ নেই কোনো ।
মাঝে মধ্যে চলকে ওঠে অভিঞ্জতা ।
ভিজিয়ে দেয় পাড়ের কালো বালি ।
জটিল-কাদা-কাদা-সোঁদাগন্ধ ভরা ।
পাতাঝাঁঝি, প্ল্যাঙ্কটন আর সবুজ
সৃষ্টি করে থমথমে রহস্য ।
পিচ্ছিলতার কারণে রহস্য-সংক্রমণ হয় ।
জরা আর বলিরেখার এখানেই মিল ।
দুজনে জবুথুবু বসে দূরে চেয়ে থাকে নিষ্পলক ।
একটা ছবি ক্যানভাসে ফুটে ওঠে ।
সূর্যাস্তের সূর্য ডোবা

অথবা- শেষ সূর্যরশ্মি ।

একলা পথে

আমার মন পিয়াসী দুপুর
উদাস দখিন হাওয়া
তার মিথ্যে কপট হাসি –
আর একলা চলে যাওয়া।

আমার দিন শেষে গোধূলি
আর – হঠাৎ সন্ধে নামা
তার মিষ্টি মুখের হাসি –
আর হঠাৎ নিভে যাওয়া।

এবার একলা পথে আমি
আর শূন্য ঘরে ফেরা ।
ঘরগুলো হোক মিছে –
তাই আবার হারিয়ে যাওয়া।

 


 

সোচ্চার​ (সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়)

আমি আছি, হ্যাঁ
সকালের হালকা হাওয়ার সুড়সুড়িতে আমি আছি
মুক্ত বেণীর মায়াজালে আমি আছি
শান্ত জলের চকিত প্রতিবিম্বে আমি আছি
গহন মেঘের কম্পনে আমি আছি;

আমি থাকি ওই ঘন কালো চোখের মণিতে
মণি থেকে উপচে প​ড়া অশ্রুতেও আমার বাস​,
হোক অট্টহাসির গর্জন বা হোক চাপা ঠোঁটের কোণে থাকা লাজ​
হোক শতাব্দী পুরানো প্রাসাদ কিংবা নবীনতম উদ্ভাবন​
তাতেও আমি নিজেকেই পাই;

দূর পর্বতের বুক চিড়ে যখন রক্ত লাভা বেরোয় তখন​
আমার বুকে থাকা চাপা ক্ষোভ মুক্তির উল্লাসে মেতে ওঠে,
মহাসমুদ্রের উদাত্ত গর্জন যখন আকাশের বুক চিড়ে ফেলে তখন​
আমারই প্রতিবাদ​ ধ্বনির​ কল্লোল মাত্রা পেয়ে থাকে
সহস্র আকুতির কণ্ঠ যখন এক ছাদের নীচে এসে
“candle light march” করে সেই আকাশচুম্বী ধ্বনির​ প্রতি স্পন্দনে
আমি আছি।

আমি আছি, হ্যাঁ
ছোট্ট শিশুর আলতো ছোঁয়ায় আমি আছি
মুমূর্ষুর শেষ ইচ্ছায় আমি আছি
আশীর্বাদী পুষ্পের অংশ আমি,
অভিশপ্ত গরলের যন্ত্রণা!

প্রতি দিনে, প্রতি ক্ষণের, প্রতি মুহূর্তের
আমাতে আমি থাকি,
ভব্য ভবিষ্যতের
তোমাতে আমি থাকি;
হাজার সাগর পেরিয়ে, সম​য়ের যবনিকা ভেদ করে
দুঃখ আর উল্লাসের মহাযাত্রা পার করে আমি ফিরব​
সেই মাতৃক্রোড়ে ॥

 


 

Announcements

  • আপনাদের আশীর্বাদে আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ অষ্টম বর্ষ অতিক্রম করলো। আমরা আমাদের এই site টি নতুন ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম। আপনাদের মতামত জানান আমাদের email এ (info@amarbanglakobita.com)। বিশদ জানতে contact us menu দেখুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
  • আনন্দ সংবাদ! আমাদের এই site এ এবার থেকে গল্প, অনু গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস প্রকাশিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

Recent Comments

Editorial Choice