Tag: Kobita

নীল হেমন্ত

আমাদের চোখ যদি নীবিড় হয়
আমাদের মুখ যদি ঘন হয়
আমাদের ঠোঁট যদি সিক্ত হয় –
           অন্য প্রেম যদি গুঁড়ো গুঁড়ো হাওয়ায় ভেসে……
           ধুলার মতো অথবা
           রেণূর মতো উড়ে যায় –
           উড়ে যায় –
আমাকে সিক্ত করে – আমাকে নিষিক্ত করে ॥
আমাদের মন যদি পোয়াতি হয় ॥

সাঁঝ বেলা – ধুপ – প্রদীপ –
ভিড়ে ঠাসা – গাদাগাদি – রক্তাক্ত যৌবন
সূর্যাস্তের মলীন ছোঁয়া
রমণীর খোঁপার মতো
পরিপাটি চাঁদ –

আমাদের দু পা যদি আড়ষ্ট হয় –
আমাদের বার্ধক্য যদি লগ্নভ্রষ্টা হয় –
আমাদের শুষ্ক হৃদয়
অচল মন – আর – নীরেট প্রেম –
           বার্ধক্য যদি……………

আমাকে ছড়ায়ে দিও হেমন্তের মতো ॥

If Bengali Not Came

যদি একটু দাঁড়াও (শুভেন্দু ধাড়া)

এক  মুহুর্ত যদি থামো ,বলতাম ভালোবাসো
এক মুহুর্ত  যদি  দাঁড়াও ,হাত দুটি বাড়িয়ে দিতাম

যে পুড়ছে অবিরত যতুগৃহে,
কাঙ্গাল  সে  কাঙ্গাল  ইন্দ্রধেণু’র ।

“ফুল সে তো গন্ধ ছড়িয়েই খালাস !
পাগল  ভ্রমর আজ মাতাল,  দেবদাস ।”

মধু আলিঙ্গনে দুই বাহু যদি বন্দি বানাতে চায়
অনন্ত জলরাশি ভাসিয়ে নিয়ে যায় !
       এও কি অপরাধ  তার ?

পালকের পরশ লাগে, কাশ ফুলে শিহরন । বসন্ত !
তুমি কবে আসবে ? না  কি এসেই পড়েছ !
বুছতে পারছিনা, দেখতে পাচ্ছি  না ,
চোখ হতে নীল তারা দুটি তুলে নিয়েছো  সেই কবেই,
সেথা এখনো রক্ত ঝরে ।

দেবী , যদি একটু দাঁড়াও ,
না হয় পুজার ছলেই কলিজাটুকুও অরপন করি তোমায়,
        তুমি সন্তুষ্ট হবে তো ?

ধৃষ্টতার হাতুড়ি

এক ছটাক মদ নিয়ে
মাতলামির অন্ত নেই আমার…..
ভাবি কয়েক হাজার বছর ধরে
একতাল কাদা, বার্নিশ
হাতে মুখে ঠোঁটে ঘষে
অবশেষে পাথুরে প্রতিমা ,
….. এটাই সত্যি ৷

নায়েগ্রার মুখের মতো ধোঁয়াশা,
হিমালয়ের বুকের মতো – বিচূর্ণ
অথবা ব্যারেনের অগ্নিগর্ভ
হৃদয় থেকে তুলে আনা
একতাল উত্তপ্ত লাভা ৷
আমি নাভিতে যোনিতে চুমু দিয়ে দেখি
রাত শেষ হয়ে গেছে –
ভোরের ঝিমুনিটুকু বাকি ৷

সকালে চোখ ঘষে বুঝি
নিজের সত্তা নিয়েই
ধৃষ্টতার অন্ত নেই আমার ৷

 

 

In PDF View

Or

dhristatar haturi

নদী (শুভেন্দু ধাড়া)

নদীর সাথে আমার অনেক দিনের ভাব ছিল,
সে খুব কবিতা ভালবাসত ।
আমি তার মন রাখতে চরে বসে বসে এক এক পাতা
লিখতাম আর ভাসিয়ে দিতাম তার বুকে ।

কবিতারা ভেসে যেত
সারি সারি নৌকা দুলতে দুলতে  মিশে যেত তার অন্তরে ।

বেশ চলছিল, এভাবেই ।
কিন্তু এক্দিন রাতে কিছুতেই ঘুম আসছিল না চোখে
কেবলই মনে হচ্ছিল কে যেন আমায় ডাকছে
নিশির ডাক, পারলাম না এড়াতে,
মহাশ্মসানের অন্ধকার প্লাবিত পথে পা রাখলাম

পায়ে পায়ে অবশেষে পৌছে গেলাম সেই চরে,
            নদীর পাড়ে ।

নদী সেই রাতে ঝরনার সুরে বেজেছিল অচিন ছন্দে ।
            জোনাকির আলোকমালায়
আমি পৌছতেই সে অপেক্ষার অস্থিরতায় আছড়ে পড়ল বুকে ।
ভাসিয়ে নিয়ে গেল মাঝদরিয়ায়, সাঁতার জানতাম না,
আমি ডুবে গেলাম, আবার ভেসে উঠলাম, এইভাবেই
হাবুডুবু খাছ্ছি আর কানে কানে শুনছি, “আজ থেকে
তুমি শুধু কবি রইলে না আর,
আজ থেকে তুমি সাগর, সাগর আমার “।

সেই রাতের পর ছয় ছটা দিন
কেটেছে নিদ্রাহীন,
বেসামাল আমার খাতার পাতা , শব্দরা ভবঘুরে দিশাহারা
কিছু হাতে আসে  কিছু অধরা
তবুও নদীর জন্য অনেক কাটাকুটি শেষে
একটি মাত্র পাতা সেজেছিল কবিতার বেশে ।

কিন্তু একি !
সাত দিনের বেলায় গিয়ে দেখি

কোথায় নদী ! কোথায় ঢেঊ !কিছুই যে নেই আর
জল স্থির সবুজ, যেন সে নদী নয়, সে নিয়েছে দিঘীর আকার
আমি চিৎকার করলাম ‘ ও নদী , তুমি কোথায় গেলে ? আমি যে কবিতা ভাসাতে এলাম ! তুমি কি নেবে না?
কোনো সাড়া পেলাম না, ” নদী , আমি সাগর বলছি তোমার সাগর, তুমি কি শুনতে পাচ্ছো না ?

এবারও কোনও উত্তর আসে না, নদীর মুখে কুলুপ
আমি দাড়িয়ে চরে, পায়ের নিচের মাটি খসে পড়ে জলে ঝুপ ঝুপ ।
জল স্থির, আমি সামনে তাকাই, সামনের ঔ বাঁকে
বাঁধ পড়েছে মস্ত এই চঞ্চলা নদীর বুকে
চোখ জল এলো আমার , ” বাঁধনেই শেষে ধরা দেবে যদি
মিছেই আমি সাগর হলাম, মিছেই ভালোবাসলাম নদী ” !

হঠাৎ আমার ইচ্ছে হল সামলের ওই বাঁধটাকে
কেটেই দিই, ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে নিঃশ্চিহ্ন করি চিহ্নকে
কিন্তু পারি না, ফিরতে থাকি আপনায়, মন নদীতে ছুটে যায়
নদী বন্দী, প্রান হারা, নদী অসহায়
নদীর বুকে অসংখ্য কবিতা, প্রেম, বিপুল শক্তি ধরে,
এতগুলো সৃষ্টিরা যা পারলো না আমি নগন্য স্রষ্টা তা পারব কি করে !

সমন (শুভেন্দু ধাড়া)

(১)

না, এর আগে কখনই সরাসরি দেখিনি,
ভয়, যদি ডুবে যাই তলিয়ে যাই, কেবল আড়চোখে
ঢেউ গুনেছি দূরের তটে বসে ।

এখন আর ভয় নেই, নাই থল !
কি যায় আসে, শিখেছি ভেসে থাকবার কলাকৌশল

কিন্তু আজ ও চোখে চোখ রাখা মাত্রই
আমার হাড়, পাঁজরা মাংসে
        আগুন জ্বলে উঠ্ল দপ করে ।

(২)
না ! ওই সব লিপি সরাও, সরিয়ে নাও,
ওরা দস্যুর মতো আমায় টেনে হিঁচড়ে নিয়ে চলছে
বই পেরিয়ে মাটি পেরিয়ে ঐ গাছ পেরিয়ে
সে এক অদ্ভুত দেশে, যেখানে তোমাকে ছাড়া
আর কাউকে দেখা যাচ্ছে না ।

(৩)
তারপর থেকে পা টলোমলো,
তারপর থেকে রাস্তা এলোমেলো
অগোছালো বিছানাপত্তর পড়ার টেবিল ।
তারপর থেকেই কোনো কথা নেই, নিরবাক।
তারপর থেকেই তিনশ ষাঠ ডিগ্রি তে ঘুরপাক।

এতো নেশা কি করে সাজাও ঐ এতটুকু পাত্রে!

(৪)
আত্মরক্ষার কলাকৌশল
নিঃস্ফল ।

যদিও বিসর্যন ।
এর পর, জলেও আগুন, আগুনে জল ।
আমার হাতে কিছুই নেই
তোমার সমনটুকু সম্বল ।

Announcements

  • আপনাদের আশীর্বাদে আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ অষ্টম বর্ষ অতিক্রম করলো। আমরা আমাদের এই site টি নতুন ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম। আপনাদের মতামত জানান আমাদের email এ (info@amarbanglakobita.com)। বিশদ জানতে contact us menu দেখুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
  • আনন্দ সংবাদ! আমাদের এই site এ এবার থেকে গল্প, অনু গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস প্রকাশিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

Recent Comments

Editorial Choice