এক।। অধঃপতন না উত্তরণ
একি আজ তবে অধঃপতন না উত্তরণ
সেদিন রেস্তোরায় তরুণী এক দল
তাদের হতাশা নাকি তা কৌতূহল;
করছে মদ্য পান গদগদ চিত্তখানি
সে কি অধুনা বিলাস উল্লাস জানি
নাকি আমারই এখনও সেকেলে মন।
দুই।। কাক ডাকা ভোরে
ঐ কাক ডাকা ভোরে যেই গাত্রোত্থান
দেখতাম আকাশ বেয়ে ঐ বলাকারা
সারি বেঁধে যায় যেন তেপান্তরে তারা;
প্রায়শ: আজ শকুন চিল উড়ে গগনে
রক্তের আর লাশের গন্ধ যে সমীরণে
নেই আর ফুলে সৌরভ পাখির কলতান।
তিন।। ফুটপাতে
একি আজ তবে অধঃপতন না উত্তরণ
খবরের পাতা খুলতেই কান্নার ছবি
চাকায় পৃষ্ট নয় গুম কত মায়ের রবি;
বাঁচার তাগিদে কাজ কর্মে কচি শিশু
ফুটপাতে ঘুমায় মানুষ পাশে ঐ পশু
অর্থে বিলাস বুঝি কারো বা রক্ত বমন।
চার।। মানুষ কাঁদায় মানুষ
সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষে কোথা আর ভালোবাসা
সেদিন দেখিনু দিশেহারা গো বাছুর
প্রসবিনী মা হারিয়ে বড়ই শোকাতুর;
সন্তান হারিয়ে কাতর এক কুকুর মা
দুধ দিতে আসে, শুনে মা ডাক হাম্বা
অথচ মানুষ কাঁদায় মানুষ,ছলনা নেশা।
সোনালী – সোনালী আবির মাখা রোদ –
সন্ধ্যা আদর করে নিয়ে গেছে তারে –
রাত্রির পর্ণ কুটিরে।।
আমি আকাশ জুড়ে তারই শব্দ ছবি –
কুড়ায়ে পেয়েছি –
মেহগনি পাতার ভিতর -।
এত কথা –
এত ঘর – এত নিবিড় আবেশ
অনেক – অনেক – বর্ণমালা – আর –
শব্দ জুড়ে – জুড়ে ।
সেদিনও কি সেই অবোধ বালক
দুধ ভাত মাখা হাতে –
দুধ ভাত মাখা ঠোঁটে –
মিশে যাবে তিমিরে – আঁধারে – ।।
সোনালী – সোনালী আবির মাখা রোদ –
সন্ধ্যা আদর করে নিয়ে গেছে তারে ?
রাত্রির পর্ণ কুটিরে।।
তবু কেন আকাশে বাতাসে –
এত সুর এত মেঘ –
এত বৃষ্টি বুকে –
নীল্ – ভাঙ্গা ভাঙ্গা – কবিতার মত – ।
মেঘ যদি মিশে যায় – শিশিরে শিশির ঝরে
আরবার –
মেঘ পোয়াতি রোদ্দুর সব –
সোনালী – সোনালী আবির মাখা রোদ ?
সন্ধ্যা আদর করে নিয়ে গেছে তারে –
রাত্রির পর্ণ কুটিরে।।
এসো তবে – অতিবৃধ্ধ – বটবৃক্ষখানি –
দৃষ্টি তোমার মেঘ হোক – রোদ হোক –
পৃথিবীর আড়াআড়ি সময়ের রেখা ধরে –
হামাগুড়ি দেওয়া – অলস সকাল।।
হাত ধরে তার – অবোধ বালক –
দুধ ভাত মাখা হাতে –
দুধ ভাত মাখা ঠোঁটে –
ফিরে যাক – ফিরে যাক – নিবিড় হৃদয় ।
চাঁদের আলোর রিফ্লেকশন|
জাকুজির আলপনা আঁকে|
মুখাবয়বে কারুকাজ|
দিনের পর দিন| বছর বছর|
হৃদপিণ্ডের লাব-ডাব|
ভাইব্রেশনে টিউনড মেসেজ|
সঠিক পাঠোদ্ধার হলও না আজও|
নিষ্ফল ডিপ্রেশনের চাপ
ক্রমশ- ক্রমাগত|
ব্রেন থেকে ব্রেনে|
গ্রে-মেটেরিয়াল বাড়ছে বা কমছে|
আনরিড থেকেই যাচ্ছে
ভাইব্রশনে টিউনড মেসেজ|
শ্যামল সবুজে ঐযে রক্তে মাখা রবি
এযে বাংলার পতাকা আকাশের বুকে;
জ্ঞাত বিশ্ববাসী, জানি তা আমরা সবি
লক্ষ লাশেরও গন্ধ আজো পাই নাকে।
কত গর্বিত জনতা, স্বাধীনতা পেয়ে
বিজয় উল্লাসে ফেটে পড়ে সারা দেশ;
এদিনে হাসির রেখা, বীরাঙ্গনা মায়ে
এখনও তবু যেন আতঙ্কের রেশ।
শহীদ সে পরিবার আজো আকিঞ্চনে
তাদের অস্তিত্ব ভারী, মুক্তির বিরোধী;
পুষ্টিতেও ভরপুর, চোরা মাল ধনে
সর্বস্বান্ত তারা, যারা তবে প্রতিবাদী।
দেখতে দেখতে, গত হলও চার যুগ
জনতা করবে কবে, স্বাধীনতা ভোগ ?
বিঃদ্রঃ –
চতুর্দশপদী
(বিজয় মাসের কবিতা)
আমার ঘরে কোথাও কোনও ঘড়ি নেই
পাশের ঘরে যেটা আছে –
তাও বন্ধ হয়েছে অনেক আগেই –
সময়ের হাত ধরে হাঁটতে ভুলে গেছি তাই।
এই সময়-হীন সময় – অনেকটা
মহাশূন্যের মতো – ।।
কোনও – টান নেই – কোথাও।
কিন্তু তবু তো তার অস্তিত্ব বুঝি সর্বত্র –
সময় নেই – তবু – হিসাব আছে –
দিবা রাত্র –
বসন্ত – চলে যাওয়া – ফিরে যাওয়া আছে –
আছে কিছু স্মৃতি –
গভীর থেকে গভীরতর –
ভেসে ভেসে চলে যাওয়া
অনেক অনেক পেছানো
সময় নেই – তবু স্মৃতি আছে গোছানো।।
সময় নেই – তাই – সময়ে তোমাকে পাই না
সময় নেই – তাই – সময়ে তোমাকে চাই না –
সময় নেই – শুধু পর পর কিছু
ইতিহাস আছে সাজানো।
ফিরে যাও – ফিরে যাও –
হে আলোকবর্ষব্যপী – জ্যোতিষ্কমণ্ডল –
হে সপ্তর্ষিমণ্ডল –
হে বশিষ্ঠ – হে অরুন্ধতী – হে কালকূট
ফিরে যাও হে ঊর্ষা।
ক্লান্ত নদীতে অনেক জল বয়ে গেছে –
প্লাবন এসেছে – উজানে –
ইতিহাস খুঁড়ে খুঁড়ে –
অনেক কঙ্কাল সব ভাসিয়ে দিয়েছি –
দীর্ঘ পথ ঘুরে
চলে গেছে – চোখের আড়ালে –
সময় নেই – তাই হিসেব নেই –
কত গেল – আরও কত আছে
তাড়া নেই – গোনবার –
সময় নেই – ।।
Recent Comments