ভৌগলিক দূরত্ব যোজন যোজন বেড়ে গেলো তোমার-আমার, কারন-অকারন যুক্তি সংগত!
দূরত্ব বাড়ানোের- এই সম্প্রসারণশীল প্রেমের মহাবিশ্ব তোমার-আমার, সংকোচনশীল হবে না কখনো- জানি আমি!
তাই ভেবেছি, তাই করেছি-
উড়ে উড়ে আকাশ ঘুরে ঘুরে মেঘের ভেলায় বাতাসের ঘূর্ণি খেলায় বিরহ জল পাঠিয়ে দেবো,
স্পর্শ উষ্ণতার অভাবে তারপর বৃষ্টির ফোটা ফোটা পৃষ্ঠটানে বন্দি করে অনুভুতিগুলো আমার-
বিন্দু বিন্দু নেমে আসবে তোমার দিকে,
তুমি তখন চঞ্চলা ময়ুরী হয়ে সবুজ মাঠে নেমে- চুল ভেজাবে, ঠোট ভেজাবে, ভেজাবে শরীর!
অজান্তে তোমার- আমিই সেই! সেই হারানো দিনগুলির দীর্ঘশ্বাস বাষ্প-মেঘ-জল!
সময় ঘন্টা খানেক । তারপর অন্দরমহলে ফিরে যাবে- তোমার “বর্তমান” হয়তো তখনও ফিরবে না ঘরে-
হয়তো কর্পোরেট জীবনে ব্যস্ত ভীষণ!
একলা, একলা চুল মুছবে, দেহ মুছবে, পরে সাজবে-
সাজবে কপাল, চোখ, ঠোঁট- রাঙা রাঙা পিরানে ঢেকে যাবে অতীত!
আমি বৃষ্টি হবো, তুমি ভিজবে অজান্তে ।
এ এক প্রেমিকের বিরহ বৃষ্টি বিলাস- থেকে থেকে দূর দূরান্তে!
কবি বন্ধুরা …
তোমার পছন্দ মতো সমবেত শব্দ যত
প্রতীতি আঙুলে কুড়িয়ে তোমার লুকানো
অভিধান থেকে,
লেখো …
সন্ধ্যা ভোর রাত্রির প্রতিহত হৃদয় জোড়া হৃদয় ভাঙা;
আকাশ পাখি মেঘ বৃষ্টির,
ছায়ার মোহক রোদ দৃষ্টির,
তোমার মত করে বিষাদ ভুলে
এক ঘর থেকে আর এক ঘরের সব দ্বার খুলে ।
লেখো:
রঙ রয়েছে পড়ে অনুভবের আবেগের সুখ ধরে
যদিও নজর কাঁচা সরস তৃষ্ণার গন্ধে বুক ভরে ।
লেখো:
কে খারাপের আড়ালে নষ্ট ছায়ে
সারাদিন ?
কে হাঁটে ভালোর খাপে অসুখ পায়ে
সারাদিন ?
লেখো:
সব দুঃখ কষ্টর কথা
বুক ফাটা জলভরা পাটাতন দীর্ঘ ভারে
দুচোখের নীরব প্রতিবাদ নদী থেকে সাগরে ।
লেখো:
ব্যথার অন্তসারে নিঃশ্বাসের ভেতর সততার আঁচ
বাতাসের হোমে ভরসার আগুন ছাই মাখা মনিময় কাচ ।
লেখো:
দুঃখ কষ্টর মধ্যে সংঘর্ষ আর সপ্নের বসুন্ধারা
দুহাত ভর্তি ক্ষুধার খুদা ধানে চালে ভাতে কুশলপারা ।
লেখো:
এরাই অন্ধকার;
এরাই অন্ধকারের শ্রেয়সী চাঁদ
এরাই জোয়ার ভাটার রূপোসি ফাঁদ ।
যে ব্যথা নিঃশ্বাসের নিশব্দতায়
এরাই চাঁদলগ্ন ধারাময় বসুধায় ।
যাওয়াই ভালো
দুপায়ে অন্ধকার ঠেলে আর এক নতুন অন্ধকারে ।
যাওয়াই ভালো
আলোর সাঁকো ফেলে আর এক নতুন অন্ধকারে ।
এখন
মাকড়সার জালে ভর্তি দেশের বাড়ি
বেঁচে থাকার তাগিদে বিদেশ পাড়ি
জেনেও ….
একদিন আসতে হবে ফেরত ঘরে
সম্পর্কের সৌরভে দু’হাত চার করে ।
দুটি হাত দুটি প্রান্ত
সতর্ক রেখে
দুহাত এক করো বা আলাদা করো
ভগ্নাংশের মধ্যেই খুঁজে নিতে হবে তোমার অবশিষ্ট
আকাশ মাটির গন্ধ তোমার ভবিতব্য
যদিও
তোমার দু’হাত আজ সর্বশ্রান্ত অথর্ব
ছেঁড়া ঘুড়ির মতো জীবনের সুতোয়
একলা কাঁটা তারে ।
মাথার উপর আকাশ
তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন ঘরলগ্ন মাটি
দেহ জুড়ানো দু’দন্ড শান্তি
নামিয়ে ব্যক্তিগত বোঝার দায় পায়ের নিচে ।
মাথার উপর ঈশ্বর
তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন শ্রমলগ্ন হাত
পেট জুড়ানো দু’ মুঠো ভাত
সারিয়ে রক্তজলের উৎস সময়ের উদ্ভিদে ।
মাথার উপর ঐশ্বর্য
তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন দেহলগ্ন বৃষ্টি
ঢেঁকি জুড়ানো দু’ধামা ধান
মাখিয়ে আপন্ন অধিকার সংঘাতের ঘামে ।
সেদিন বৃষ্টি হবার কথা ছিলো- শুকনো রাতের মধ্যগভীরে,
ময়ূরপঙ্খী মেঘের ডানায়- আসবে বর্ষা রানী চড়ে ।
হাসনাহেনার সৌরভ মেখে একলা বসে ছিলাম আমি,
তোমার পায়ে নূপুর নৃত্য “যোধা বাঈ”-থেকে দামি !
অপলক অপেক্ষায় ছিলো নেত্রযুগল- ক্লান্তি উপেক্ষা করে,
সেদিন বৃষ্টি হবার কথা ছিলো- শুকনো রাতের মধ্যগভীরে ।।
পাগলা হাওয়ায় ছিলো সেদিন শীতল শীতল ঘ্রাণ,
পাথুরে ও মনে ফুল ফুটে যায় পেলে প্রেমের প্রাণ !
রিক্ত মরু সিক্ত হলে সবুজ ঘালিচায় জলসা ঘর সাজে,
মিলনের সুরে পুরুষ মনে- নিরলস মোহন বাঁশি বাজে ।
“কেন” বুঝলো না বর্ষা রানী, আসলো না আমার ঘরে,
সেদিন বৃষ্টি হবার কথা ছিলো- শুকনো রাতের মধ্যগভীরে ।।
হলো না…. বৃষ্টি সেদিন । কথা বদলে গেলো ।
জীবনটা যাযাবর হলো । হলো এলোমেলো ।
ভাঙন খেলায়- বুকের নদী; প্রেমের সব জমিই নিলো কেড়ে !
সেদিন বৃষ্টি হবার কথা ছিলো- শুকনো রাতের মধ্যগভীরে ।।
Recent Comments