Tag: Bangla Kabita

আমি নয় – ওরা

সেই এক সুর – বড় একঘেয়ে – মিনমিনে এক সুর।
অথবা সবলে উৎপাটিত কোনো –
ইতিহাসের পাতা খুঁড়ে খুঁড়ে বিবর্ণ মমির মতো।
এক – অবিনশ্বর – অদ্বিতীয় – অমোঘ।
পচা – দীর্ণ – দুস্থ – দিনের পর দিনের উদ্বৃত্ত বাসি মড়ার মতো,
এক সুর।
বড়ো প্রত্যাশিত ।
আমি নয়, আমরাও নয় – ওরা।

আবারও আসিও ফিরে

আবারও আসিও ফিরে –
এই – ভোর কুয়াশার তীরে –
নরমে লাজুকে – শিশিরে নিশীথে –
কাটে নাকো নিশি – একলা ফিরিতে।
স্নিগ্ধ সবুজে, নুপুর’ পরশে
যুথিকা ডালিতে হিমেল দিবসে।

একা যেন ধাই – তোমা প্রাণে নাই –
আমাতে তোমাতে দোহারে মিলিতে
তপোবন’ মাঝে দেউড়ি খুলিতে –
শেষ বার যেন – মরমে পরশে –
শীতল উষ্ণতা তব – পুলকে হরষে।
অমা নিশি শেষে – সেই যেন পাই-
আর কিছু নাই – আর কেহ নাই –
বিদায় দেহ – এইবেলা যাই।

(ধন্যবাদান্তে – শ্রীযুক্ত সুদীপ্ত মাইতি )

                  (অমিতাভ)

কাল দেখো তবে

“থেকে যেতে পারতে! আরও একটা মাস – আরও একটা বছর –
যেমন ভাবে – পাখিদের গান শুনে শুনে – তিস্তার কোলে মাথা রেখে-
এই পাথরের স্তূপ গুলো রয়ে গেছে – কতকাল।
সবুজের ডানা মেলে – সন্ধ্যা নামার আগেই না হয় –
আমাদের – হয়ে যেতে। ”

“তোমাদের হতে গেলে – বুকে লাগে দম –
প্রাণে চাই স্ফূর্তি – রক্ত আরো লাল হওয়া চাই। ”

“বেশ – তবে তোমায় আরও রাঙিয়ে দেব –
কাল ঠিক সূর্য ওঠার আগে;
স্বপ্নের কড়িকাঠ গুলো পেরিয়ে –
ঘুম ভেঙে – এসে দাড়িও – এইখানে – এইভাবে। ”

“জানি না – সেই অন্ধকার ঠেলে আসা হবে কিনা।
ঘুম ভাঙার ঠিক আগে – যখন যন্ত্রনা গুলো খুব জাগ্রত হয়ে ওঠে –
মনে হয় মুহূর্তে মুহূর্তে স্খলন – আর কদাকার তছরুপ,
সর্পিল আগ্রাসন – আমাকে গ্রাস করে।
আমি তখনি ঠিক – আবার ঘুমিয়ে পড়ি।
মনে হয় এই প্রভাত – এই সূর্য – এই আলো – কিছুই চাই না –
অন্ধকার ঢের ভালো। আমি ঘুমিয়ে পড়ি। ”

“বেশ – তবে তোমার সেই যন্ত্রণার ঠিক আগে –
তুমি দেখো – আমি এসে যাবো।
তোমার বাড়ীর উঠানে – যেখানে একরাশ শিশির এসে –
বরফ হয়ে গেছে –
আমি ঠিক এসে যাব।
কাল দেখো – তোমার ভোর গুলো সব তারা হয়ে যাবে –
পাহাড়ের গায়ে গায়ে; আর কান্না গুলো বরফ।
হেমন্তের মিষ্টি গন্ধ গুলো সাজিয়ে দেব তোমার বাগানে –
তোমাকে রাঙিয়ে দেব – অনেক – আমার নরম ভোরে। ”

থাক! এখন ওসব কথা থাক।
স্বপ্ন দেখতে বড় ভয় হয় – তাই কত দিন আমি স্বপ্ন দেখি না।
আচ্ছা বলতো – এখনো কি শিশিরের দানা খুঁটে খুঁটে সেই ভাবে ভোর নামে –
আর সেই স্তর স্তর জমে থাকা অভিমান গুলো –
এখনো কি লজ্জায় লাল হয়ে যায় ?
ভোর দেখতে বড়ো ভয় হয় – কতদিন আমি ভোর দেখি না।

ভোর!
আরও সুন্দর হয়েছে সে।
কাল দেখো তবে – রঙ্গীতের তীর ধরে –
আলতা ভেজা পায়ে দুরন্ত কিশোরীর মতো।
কাল দেখো তাকে।
আমি বলে দেব – মাথায় হলুদ রডোডেনড্রন –
আর – হাতে যেন থাকে মোহন বাঁশি।
তোমার স্তব্ধ চোখ দুটি – নীল – আরও গভীর নীল – ঘন করে –
রক্তিম আবদারে –
একসাথে যেন কবিতারা ঘর করে। আমি বলে দেব।
কাল দেখো তবে।

                  (অমিতাভ)

আজন্মের সুখ

এই নাও টুকরো টুকরো হৃদয় আমার,
আর আমায় দিয়ে যাও – তোমার স্তব্ধতা।
এই-সব তুমি পাখি করে দিও –
কান্নাগুলো ফুল।
নিয়ে নাও যত বন্ধন – যত নিয়ম – যত শৃঙ্খল,
বে-নিয়মে – আমাকে দাও তোমার মুগ্ধতা।
এক টুকরো কাঞ্চনজঙ্ঘা।
নিঃশ্বাসে তোমার বৃষ্টি নামে,
এক নীল, – রাঙিয়ে দেওয়া বৃষ্টি।
মনে হয় – মেঘে মেঘে ঝর্ণার রং –
ঘ্রান নেমে আসে – আজন্মের সুখ।
পিঠে – বুকে এলোমেলো শীতল হাওয়া,
ভেঙে পড়ে রোদ্দুর।
আমি মেঘলা হবো – তুমি আকাশ পারে কবি।

মেঘলার রূপকথা

ট্রেনটা কখন যেন শ্বাপদের মতো চুপিসাড়ে এসে দাঁড়িয়েছে।

সারা রাস্তা বয়ে আনা বোঝাটা পাশে সরিয়ে মন চায় –
আরও একটু স্পর্শ।
সেই আমি – আর – তুমি;
ঠিক হারিয়ে যাওয়ার আগে –
নতুন দিনের মতো।

তোলপাড় করে ওঠে আমার নিটোল বুনোট।
ফিস ফিস করে জানান দেয় – শ্বাপদটা –
সময় শেষ হওয়ার যন্ত্রনা।

ঠিক সেই সময় দেখি –
তুমি তখনও দরকষাকষিতে ব্যস্ত –
আরও দু চার পয়সার সস্তা সাশ্রয়।

এইভাবেই –
ধীরে ধীরে কুয়াশায় মধ্যবিত্ত প্রেম –
মধ্যবর্তী – হয়ে যায়।
শুধু ঝাপসা আলোয় হয়তোবা দু ফোঁটা জলের রেখা –
দু হাত শূন্যে তুলে গর্জে ওঠে –
অপূর্ণতা যদি কিছু থেকেও যায় –
তা কিছু বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো নয় -।

Announcements

  • আপনাদের আশীর্বাদে আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ অষ্টম বর্ষ অতিক্রম করলো। আমরা আমাদের এই site টি নতুন ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম। আপনাদের মতামত জানান আমাদের email এ (info@amarbanglakobita.com)। বিশদ জানতে contact us menu দেখুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
  • আনন্দ সংবাদ! আমাদের এই site এ এবার থেকে গল্প, অনু গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস প্রকাশিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

Recent Comments

Editorial Choice